তারাগঞ্জে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে ইউক্যালিপটাস গাছের চারা
এম এ শাহীন, রংপুর: রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ও ভ্যানে করে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা।
অল্প সময়ে এই জাতের গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর থেকে অল্প সময়ে অধিক অর্থও উপার্জন সম্ভব বলে পরিবেশের ক্ষতির কথা চিন্তা না করেই রোপণ করছে নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা।
পরিবেশবিদদের মতে, ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ মাটির গভীর থেকে প্রচুর পানি শোষণ করে। এর ফলে এর আশপাশের জমি শুষ্ক হয়ে পড়ে। এছাড়াও এগাছের নিচে অন্য কোন গাছপালা সহজে জন্মাতে পারে না। এর ফলে জীববৈচিত্রেও ব্যাঘাত ঘটে। এমনকি এই গাছের পাতা ও ছাল পঁচনশীল নয়। যা মার্টির উর্বরতা কমিয়ে দেয়।
শুক্রবার তারাগঞ্জ হাটে ইউক্যালিপটাস গাছের চারা কিনতে আসা ঘনিরামপুর গ্রামের মোঃ রহিম উদ্দিন বলেন, ‘এখন বর্ষা মৌসুম চলছে। গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় এখন। ইউক্যালিপটাস গাছের চারা কিনতে আসছি হাটে। এই চারা কিনে নিয়ে আমি আমার জমিতে রোপণ করবো। আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যে গাছগুলো বড় হবে। অল্প সময়েই গাছগুলো বড় ও মোটা হয়। এর কাঁঠের চাহিদা বাজারে বেশি থাকার কারণে টাকাও ভালো পাওয়া যায়।’
ঘনিরামপুর গ্রামে ভ্যানে করে গাছ বিক্রি করতে আসা হোসেন আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ আমি ভ্যানে করে এই গাছের চারা বিক্রি করছি। আমাকে এখন পর্যন্ত এই গাছের চারা বিক্রি করতে কেউ নিষেধ করেনি। অন্যান্য গাছের চারার চেয়ে এই গাছের চারা লকজন বেশি কিনে নেয়। আর আমিও এ জন্য এগাছের চারা বেশি বিক্রি করি। এই গাছ বিক্রি করতে যদি প্রশাসন নিষেধ করে তাহলে আর এই গাছ বিক্রি করবো না। তখন অন্য গাছের চারা বিক্রি করবো।’
তারাগঞ্জ বাজারের একাধিক ব্যবসায়ি জানান, ‘ প্রশাসনের সঠিক তদারকি না থাকার কারণে তারাগঞ্জে শুক্রবার ও সোমবার সপ্তাহে ২ দিন হাটবারে তারাগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় দেদারছে বিক্রি করছে পরিবেশের ক্ষতিকর নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা। প্রশাসন এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
সরকার সম্প্রতি ব্যক্তিগত, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা রোপণ, উৎপাদন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে।
তারাগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান খান বলেন, ‘ আমরা নিষিদ্ধ ওইসব গাছের চারা বিক্রি বন্ধের জন্য বলেছি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে ওইসব গাচের চারা ধ্বংস করছি।
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রুবেল রানা বলেন, তারাগঞ্জ হাটে যেখানে এইসব গাছ বিক্রি করেন সেখানে গিয়ে আমরা নিষিদ্ধ ওইসব গাছের চারা নষ্ট করেছি। বিক্রির জন্য তাদেরকে নিষেধ করেছি। কেউ যদি নিষেধ অমান্য করে ওই গাছের চারা বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।