জুলাই আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ দিনগুলোতে নির্ভীক এক কণ্ঠস্বর: সাংবাদিক সুলতান মারজান (হৃদয়)
নিজস্ব প্রতিবেদক:-রংপুর জেলার মিঠাপুকুরের ইতিহাসে জুলাই আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আন্দোলনের সেই উত্তাল সময়ে, যখন রাজপথ জ্বলে উঠেছিল প্রতিবাদে এবং জনতা ও ছাত্রসমাজ অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রামে নেমেছিল—তখন সংবাদপত্রের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সময়ে অনেক স্থানীয় সাংবাদিক নিরাপত্তাজনিত কারণে নিশ্চুপ থাকলেও, সাহস ও পেশাদারিত্বের মিশেলে একজন সাংবাদিক তার কলম ও ক্যামেরাকে সত্য প্রকাশের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তিনি ছিলেন—সাংবাদিক সুলতান মারজান (হৃদয়)।
সাংবাদিক সুলতান মারজান (হৃদয়) মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। একজন গ্রামের সন্তান হিসেবে তিনি সহজেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারেন এবং গোড়া থেকে সংবাদ সংগ্রহ করার দক্ষতা রাখেন। এ কারণেই তাঁর সংবাদে থাকে বাস্তবতার ছাপ ও প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর।
জীবন ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা
জুলাই আন্দোলনের প্রতিটি মিছিল, সমাবেশ, এবং প্রতিবাদী মুহূর্ত—সবকিছুই তিনি নির্ভয়ে ক্যামেরায় ধারণ করেছেন। আন্দোলনের শুরু থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত, সুলতান মারজান (হৃদয়) মাঠে ছিলেন—অনেকের অনুকূল পরিস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও। সুলতান মারজান ছিলেন সম্মুখ সারিতে, যেখানে নিজের জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও তিনি মিঠাপুকুরের আন্দোলন, সংগ্রাম, এবং জনদুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি সরাসরি সম্প্রচার করেছিলেন ফেসবুক পেজ “Latest News Mithapukur”-এর মাধ্যমে।
ডিজিটাল মিডিয়ার বিপ্লবী ব্যবহার
ফেসবুক পেজ “Latest News Mithapukur”-এর মাধ্যমে তার সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ) জনসাধারণকে আন্দোলনের বাস্তব চিত্র দেখার সুযোগ করে দেয়। এটি প্রমাণ করে যে, একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিভাবে নির্ভীক সাংবাদিকতার শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। সুলতান মারজান (হৃদয়) এর প্রচারিত লাইভ ভিডিওগুলো মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে হাজারো মানুষের মধ্যে, যার ফলে জনমানুষের কাছে সত্য তুলে ধরার তার দায়িত্বশীল ভূমিকা গণমাধ্যমের ইতিহাসে এক অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবতা তুলে ধরা
সুলতান মারজান (হৃদয়) শুধু স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করেননি, বরং জাতীয় দৈনিক ‘দৈনিক আজকের জনবানী’-তেও নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে মিঠাপুকুরের পরিস্থিতি জাতীয় পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন। তার প্রতিবেদনগুলো জাতীয় গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে স্থান পায়, যা সারা দেশের মানুষকে মিঠাপুকুরের আন্দোলনের বাস্তব চিত্র সম্পর্কে অবগত করে।
পেশাগত পথচলা
সুলতান মারজান (হৃদয়) সাংবাদিকতা জীবনের শুরু করেছিলেন রংপুর থেকে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টাল “সত্যের কণ্ঠ” এর মাধ্যমে। পরে তিনি “দৈনিক ক্রাইম তালাশ”-এ রংপুর জেলা প্রধান হিসেবে কাজ করেন এবং “দৈনিক সাইফ”-এ যোগ দেন। ২০২২ সালে তিনি জাতীয় পত্রিকা “দৈনিক আজকের জনবানী”-তে যুক্ত হন এবং বর্তমানে তিনি “দৈনিক মানবকণ্ঠ” পত্রিকার মিঠাপুকুর উপজেলা প্রতিনিধি এবং “দৈনিক মুক্তি”-র রংপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি, “Latest News Mithapukur” পেজের মাধ্যমে তিনি মিঠাপুকুরের প্রতিদিনের ঘটনা ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছেন।
সমাজসেবায় অগ্রণী ভূমিকা
সাংবাদিকতা ছাড়াও সুলতান মারজান (হৃদয়) একজন নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবক। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন “জায়গীরহাট ব্লাড ব্যাংক” নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যা ইতোমধ্যে হাজার হাজার অসুস্থ ও রক্তের অভাবে সংকটে পড়া মানুষকে সেবা দিয়ে আসছে। সংগঠনের সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তদানে অংশ নেন এবং জরুরি পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ান।
এছাড়া, ২০২২ সালে তিনি গঠন করেন আরেকটি মানবসেবামূলক সংগঠন “নিঃস্বার্থ সমাজকল্যাণ যুব সংঘ”, যার মাধ্যমে তিনি অসহায়, দরিদ্র ও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বর্তমানে, তিনি এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাংবাদিকতার প্রতি নিষ্ঠা ও সমাজকল্যাণে অঙ্গীকার
মাঠের সাহস, কলমের সততা, ক্যামেরার দৃষ্টিভঙ্গি, এবং মানুষের জন্য আত্মনিবেদিত হৃদয়—এই চারটি শক্তিকে একত্রে ধারণ করেছেন যে মানুষ, তার নাম সুলতান মারজান (হৃদয়)। সাংবাদিকতা শুধু পেশা নয়, এটি এক নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের সংগ্রাম—এই সত্যকে তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন তার কাজের মাধ্যমে। মিঠাপুকুরের ইতিহাসে তার নির্ভীক সাংবাদিকতা এবং সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।