মিঠাপুকুরে ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ
মোঃ সুলতান মারজান, স্টাফ রিপোর্টার:-ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অমানবিক নির্যাতন ও অর্থ-সম্পদ ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ।
মারপিটের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূ বর্তমানে মিঠাপুকুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিলো। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শারমিন বেগম (২১)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে মোঃ মোনোয়ার হোসেন (২৭)-এর সঙ্গে একই উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের জয়রামপুর আনোয়ার গ্রামের মোঃ হাসেন আলীর কন্যা মোছাঃ শারমিন বেগম (২১) এর আনুমানিক পাঁচ বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয়।
বিয়ের পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারমিনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শারমিন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে একটি নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে শারমিন তার এক পুত্র সন্তানকে মায়ের কাছে রেখে ঢাকায় চলে যান।
সম্প্রতি পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে শারমিন তার পিতার বাড়ীতে বেড়াতে আসেন। গত শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় শ্বশুর মোঃ শাহাদত হোসেন (৬০) শারমিনকে কৌশলে তাদের বাড়ীতে বেড়াতে ডাকেন। শারমিন সরল বিশ্বাসে শ্বশুরবাড়িতে প্রবেশ করা মাত্রই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সকল বিবাদী – মোঃ শাহাদত হোসেন (৬০), মোঃ আলমগীর হোসেন (৪৮), মোঃ মোনোয়ার হোসেন (২৭), মোছাঃ শাহাবানু (৩৭), মোছাঃ মোনোয়ারা বেগম (৫৫), মোছাঃ মিনতী বেগম (২৮) এবং মোঃ সাজিম মিয়া (১৯) – মেইন গেটের দরজা বন্ধ করে শারমিনকে ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মেরে গুরুতর জখম করেন।
শারমিন প্রাণ রক্ষার্থে মেইন গেটের দরজা খুলে বাইরে আসার চেষ্টা করলে বিবাদীরা তাকে বাড়ির উঠানেও এলোপাথাড়ি মারপিট করেন এবং তার লাগেজ ও ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ৭,০০০/- টাকা ছিনিয়ে নেন। বিবাদীরা শারমিনকে বেধড়ক মারপিট করে এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
তবে ঘটনায় কথা অস্বীকার করে অভিযুক্ত মিনতী বেগম বলেন, শারমিন আমাদের বাড়িতে এসেই গালিগালাজ করতে থাকে। পরে আমার বাবার আঙ্গুলে কাপড় দেয়, তাই আমার বাবা শুধুমাত্র একটি থাপ্পড় দেয়। পরে আমি গেলে শারমিন আমার উপর আক্রমণ চালাল, পরবর্তীতে তাকে আমার ভাই মোনোয়ার হোসেন চড় থাপ্পড় মেরেছেন। তবে ৭ জন মিলে শারমিনের উপর আক্রমনের ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
প্রতিবেশী মাতুয়ারা বেগম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গিয়ে বলেন, মেয়েটিকে একা পেয়ে তারা ৭ জন মিলে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে। মেয়েটির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে পুরো উঠানে টেনে হেঁচড়ে বেড়িয়েছে। আমরা গ্রামবাসী এই অমানবিক নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার চাই।
মিঠাপুকুর থানার তদন্তকারী এস আই শহিদুল বলেন, আমি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আইনকানুন ব্যবস্থা চলমান আছে।