শ্যামনগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তা শাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন ওই কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী
শ্যামনগর প্রতিনিধি: কর্মক্ষেত্রে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে শ্যামনগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তা শাকির হোসেনের বিরুদ্ধে গত ১৮ মে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন ওই কার্যালয়ের ৫৭ জন অফিস কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ৬ জন। যদিও এর মধ্যে রফিকুল ইসলাম নামের একজন অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন।
তার প্রত্যাহারকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের অধীনস্থ গাবুরা ইউনিয়ানের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে কর্মরত। তিনি তার কয়েকজন সহকর্মীদের কু-প্ররোচোনায় পড়ে ভুলবশত তাদের সাথে অভিযোগ পত্র সই করেন। পরে তিনি অভিযোগটি ষড়যন্ত্রমূলক জানতে পেরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এদিকে, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে ওই কার্যালয়ে ৫৭ জন কর্মচারী ওই কর্মকর্তারার অধীনস্থ কর্মরত রয়েছেন। তাদের মাত্র পাঁচ জন কর্মচারী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে অভিযোগকারীরা ওই কর্মকর্তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এমন কর্মকাণ্ড করেছেন।
জানা গেছে, পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ইউনিয়ন পরিদর্শকদের ভ্রমণ বিল দেয় সরকার। এই ভ্রমণ বিল আত্মসাৎ করার সুযোগ না দেওয়ায় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন তারা।
পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে ও বিভিন্ন কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, বিগত ২০২১ সালে যে সময় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন শাকির হোসেন সেসময় ছাড়া ২০২৪ সালে অন্য একজন কর্মকর্তা দায়িত্ব থাকাকালীন দ্বিগুণ ভ্রমণ বিল তুলেছেন অভিযোগকারী কর্মচারীরা। পরবর্তীতে পুনরায় ২০২৫ সালে শাকির হোসেন দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নিয়ম মেনে সঠিক ভ্রমণ বিল দেওয়াতে তারা এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সে সময় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা শাকির হোসেন তাদের ওই অনৈতিক সুবিধা দিতে অস্বীকার করায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভিত্তিহীন অভিযোগ করেন।
নিয়ম অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকরা ইউনিয়ন কার্যালয় হতে উপজেলা কার্যালয়ের দূরত্ব সর্বনিম্ন ৮ কিলোমিটার না হলে ভ্রমন বিল নিতে পারবেন না। অথচ অভিযোগকারী কয়েকজন এর ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন।
এছাড়াও অভিযোগকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা শাকির হোসেনের অভিযোগ তারা নিয়মিত তাদের নির্দিষ্ট কর্মস্থলে যোগদান করেন না। কর্মস্থলে খামখেয়ালিপোনা যাতায়াত করেন।
এসব বিষয়ে অভিযোগকারী মহিউদ্দিন আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব বিষয়ে আপনার সাথে সাক্ষাতে কথা হবে। আমি মোবাইলে কিছু বলতে চাচ্ছি না। এছাড়াও এ বিষয়ে আমাদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। উর্দ্ধতন কর্মকর্তা কে এমন প্রশ্নে তিনি সাতক্ষীরা জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালকের কথা উল্লেখ করেন। এরপর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে উপজেলা পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাকির হোসেন বলেন, আমি আমার দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করছি। আমার বিরুদ্ধে বিশেষ একজন কর্মকর্তার ইন্ধনে কিছু কর্মচারী ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। আমার অফিসে ৫৭ জন কর্মচারী। এর মধ্যে ৬ জন কর্মচারী এই ষড়যন্ত্র করছে। তাদেরকে আমি অনৈতিক সুবিধা দিতে অস্বীকার করায় তারা আমার বিরুদ্ধে এমন সব ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন।