রংপুরের এনায়েতপুর গ্রামে কবি আদিল ফকিরের উদ্যোগে গড়ে উঠছে “পল্লী জাদুঘর”
জাদুঘর মানেই হারিয়ে যাওয়া প্রাচীনকালের জিনিষপত্র হর কিংবা ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক বাহকের সংগ্রহশালা। এমনি এক সংগ্রহশালা পল্লী জাদুঘর’টি গড়ে উঠছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার নিভৃত পল্লী এনায়েতপুরের ফকিরবাড়িতে। ট্রেনের আদলে তৈরী করা জাদুঘরে স্থান পেয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়া ৬০ থেকে ৯০ দশকের সময়কালে মানুষের ব্যবহৃত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী জিনিষপত্র। হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পল্লী জাদুঘর গড়ে তোলার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন কবি আদিল ফকির। যিনি একজন সংস্কৃতিমনা ও ইতিহাস ঐতিহ্যের অনুসন্ধ্যানী শেকড় না ভোলা মানুষ। সরেজমিনে দেখা’ যায়, এনায়েতপুরের ফকিরবাড়ির পল্লী জাদুঘর যেন এক ইতিহাসের সংগ্রহশালা। যেখানে রয়েছে ৩০ থেকে ৫০ বছর আগে দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহৃত ঢেঁকি, চুলা, হ্যাচাক, হারিকেন, তালপাতার পাখা, একতারা, টাকার সিন্ধুক, কলেরগান, ডুগডুগি, রেডিও, পানের বাটা, কুপি, ভিসিডিআর, গরুরগাড়ি, যাতা, হুকাসহ ১৫৫ রকমের বিলুপ্ত প্রায় জিনিষপত্র।। এছাড়াও সংগ্রহে রয়েছে কয়েক দশকের প্রচলিত মুদ্রা ও ডাক টিকিট। এই সংগ্রহশালা গ্রামীন সমাজ জীবনের চিত্র, লোক চিত্র, কৃষিভিত্তিক জিনিষপত্রকে তুলে ধরার সুযোগ তৈরী করেছে নতুন প্রজন্মের কাছে। কয়েক একর জমিতে গড়ে ওঠা ফকির বাড়ির পল্লী জাদুঘর ঘিরে রয়েছে ফকির বাড়ির পাঠশালা, উন্মুক্ত পাঠাগার, সান বাধানো পুকুর, নানান জাতের বৃক্ষের সমাহার। এই পরিসরকে আরো বড় পরিসরে নেওয়ার পরিকল্পনা জানিয়েছে কবি আদিল ফকির। এ দিকে উদ্বোধনের আগেই ফকিরবাড়ির পল্লী জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন দেশের সুনামধন্য লেখক, গবেষক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, আইনজীবী ও ইতিহাসবিদসহ নানান পেশার মানুষ। এই ব্যতিক্রমী পল্লী জাদুঘর আগামী ২-৩ মাসের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা। যখন গ্রাম বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার পথে ঠিক তখনই এই পল্লী জাদুঘর গ্রামীন ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারন করার প্রেরনা যোগাবে। উদ্যোক্তা আদিল ফকির জানিয়েছেন দেশের জাতীয় ইতিহাসে এই পল্লী জাদুঘর স্থান করে নেবে সেই চিন্তা থেকেই জন্মভিটা আর নিজ গ্রামের কথা মাথায় রেখে এই পল্লী জাদুঘরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের শুরুতেই ঢাকা থেকে কলের গান পেয়েছি। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ফোন করে তাঁর কিংবা পরিবারের প্রয়াত কারো ব্যবহৃত যত্ন করে রাখা সত্তর দশকের জিনিষটি পাঠাচ্ছেন। পল্লী জাদুঘরের এই উদ্যোগে ব্যাপক সাড়া মিলছে, দেশের বিভিন্ন স্থান হতে ঐতিহাসিক জিনিসপত্র সংরক্ষণের জন্য অনেকেই সাড়া দিয়েছেন।