মিঠাপুকুরে মসজিদের জায়গা দখল করে পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ
রংপুর প্রতিনিধি:-আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শাল্টিরহাট এলাকায় মসজিদের জন্য কেনা জমিতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইটের পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় মুসল্লি ও বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শাল্টিরহাট জামে মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানান, শাল্টিরহাট বাজারে মসজিদের কেনা ১০ শতক জমি স্থানীয় দুলু ও লুলু নামের দুই ভাই এবং স্বাধীন নামের এক ব্যক্তি ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে জোরপূর্বক দখল করে টিনের ছাপড়া ঘর তৈরি করে। নিরুপায় হয়ে মসজিদ কমিটি আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলার প্রাথমিক বিচারিক কার্যক্রমে আদালত বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে নিজ নিজ অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেন।
তবে, মসজিদ কমিটির অভিযোগ, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে দুলু-লুলু সহোদর-গং ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনীর সহায়তায় মসজিদের দাবি করা বিরোধপূর্ণ জমিতে তাদের উঠানো ছাপড়া ঘর ভেঙে সেখানে ইটের তৈরি পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করেছেন।
শাল্টিরহাট জামে মসজিদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সেক্রেটারি আশেক আলী মাষ্টার, মুসল্লি ওয়াজেদ আলী ও আশিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তারা চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলেন এবং চেয়ারম্যান চৌকিদার পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা চেয়ারম্যানের নির্দেশ মানেনি। এরপর তারা মিঠাপুকুর থানায় যান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ করে দেয়। কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকার পর তারা আবার নির্মাণ কাজ শুরু করে। মসজিদ কমিটির সদস্যরা কাজে বাধা দিলে প্রতিপক্ষরা তাদের ধাক্কাধাক্কি, গালিগালাজ ও মারপিট করে খুন-জখমসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ দুলু-লুলু গং দাবি করেন যে, মসজিদ কমিটির লোকজন অবৈধ মালিকের কাছে ওই জমি কিনেছে। তারা বৈধ মালিকের কাছে জমি কিনে বাড়ি করেছেন এবং বর্ষাকাল হওয়ায় ঘরে পানি পড়ছে, তাই তারা ঘর মেরামত করছেন। তারা আরও বলেন যে, মামলার রায়ে মসজিদ জমি পেলে তারা ঘর ভেঙে জায়গা খালি করে দেবেন।
১০নং বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাজাহান আলী বলেন, জমিটি নিয়ে মামলা চলছে। তিনি প্রতিপক্ষকে চৌকিদার পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেছিলেন, কিন্তু তারা শোনেননি। তিনি মসজিদ কমিটিকে থানা বা আদালতে যেতে বলেছেন।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, মসজিদ কমিটির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর কী হয়েছে তা তিনি জানেন না, কারণ মসজিদ কমিটি এরপর আর কোনো অভিযোগ করেনি। তিনি আশ্বাস দেন যে, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং তারা দ্রুত সমস্যার সমাধান ও ন্যায়বিচার দাবি করছেন।